আমি খুশি, নোমান ও ইফতার

আমি খুশি


বৃহস্পতিবার সকাল। বাসা থেকে বেরোলাম। আকাশ মেঘলা। উদ্দেশ্য বায়তুল মুকাররম ক্যামেরা মার্কেট তারপর বাবুবাজারের ঔষধ মার্কেট। ক্যামেরার মার্কেট ঘুরে শেষ পর্যন্ত ক্যামেরা প্লাস ব্যবহার পছন্দ হলো ক্যামেরা মিউজিয়ামের। মোটামুটি দরদাম ঠিক করে বের হলাম বাবুবাজারের উদ্দেশ্যে। স্টেডিয়াম মার্কেটের গেট দিয়ে বের হয়ে রিক্সা নিলাম একটা। বৃষ্টি হচ্ছিল গুড়ি গুড়ি। গুলিস্তান পার হয়ে দেখি হাতে বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ড্রাইভার মামা যে প্লাস্টিক দিয়েছিল সেটা ছিড়া। মামাই প্রথম লক্ষ্য করলেন। জিজ্ঞেস করলাম আগে ছিঁড়া ছিল না এখন ছিঁড়েছে? বললেন, আপনি যেভাবে ধরেছেন চাকার ভিতর গিয়ে ছিঁড়ে গেছে। মনে একটু কষ্ট লাগল, বেচারা গরীব মানুষ; তার উপর কথায় কথায় জানলাম, প্লাস্টিকটা উনি সকালে মাত্র কিনেছেন। আরো যা জানলাম, সকালে এক লোক তাড়াহুড়ো করে ট্রেন ধরতে গিয়ে তার ভাড়া আর দিয়ে যায়নি। আরেক লোক ভাংতি নেই বলে ছেঁড়া একটি নোট দিয়ে গেছে। আমি উঠলাম তার প্লাস্টিক ছিঁড়ে গেল। :(

বাবুবাজার গিয়ে ৬০ টাকা ভাড়ার সাথে (বৃষ্টির দিন বলে ভাড়া একটু বেশিই নিয়েছিল) আরো ৪০টাকা দিয়ে দিলাম প্লাস্টিক কেনার জন্য (আমি জেনে নিয়েছিলাম ৪০টাকা লাগে)। বেচারা তো মহাখুশি। খুশিতে বলছিল, আমি খুব খুশি মামা, খুব খুশি। বললাম, দেখলেন… আল্লাহ আপনাকে লাভের মুখ দেখিয়ে দিয়েছেন। রোজাগুলো ঠিকমত রাইখেন।

নোমান


বাবুবাজারের কাজ সেরে রিক্সা নিলাম গুলিস্তান বিআরটিসি কাউন্টার পর্যন্ত। কিন্তু ক্লান্তিতে এত ঘুম আসছিল বলার মত না। রিক্সায় বসেই ঝিমাচ্ছিলাম। একবার তো ড্রাইভার ব্রেক করার সাথে সাথে তার উপর গিয়ে পড়ার উপক্রম হলো। 😀 কাউন্টারের কাছে এসে খুব বৃষ্টি। পাশের মাসজিদে গিয়ে আশ্রয় নিলাম। কিছুক্ষণ বসে ঝিমিয়ে রওনা দিলাম গুলিস্তান মোড়ের দিকে। ফ্লাইওভারের নিচে এসে পেছন থেকে ফায়সাল ভাই ডাক। তাকিয়ে দেখি আমার মাদ্রাসার ক্লাসমেট নোমান। প্রায় ৪ বছর পর দেখা। ঢাকায় এসেছিল মাদ্রাসার কাজে। এখন ব্যাক করবে। কথাবার্তা বলে বিদায় নিলাম কিন্তু বাসায় এসে খুবই আফসোস হচ্ছিল কেন ওকে বাসায় নিয়ে এলাম না।

ইফতার


ইফতারের দাওয়াত ছিল বন্ধু সাকিবের বাসায়। গুলিস্তান থেকে উঠলাম মৈত্রিতে। এত্ত জ্যাম… মৈত্রি পরে বিকল্প রাস্তায় নীলক্ষেত দিয়ে ঢুকল সিটি কলেজের ওদিকে। অবধারিতভাবে বাসে ঘুমাচ্ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি বাস ইউল্যাব পার হচ্ছে। আমি মনে ভাবছি, আরে! শঙ্কর তো পার হয়ে যাব। তাড়াতাড়ি নামলাম। কিন্তু নেমে কোন রিক্সাই তো আর নিরিবিলি হাউজিং এ যায়না। কেউ যাবেনা আর কেউ চিনেনা। শেষে এক চাচাকে পেলাম যাবে। চাচা বললেন, শংকর না? তখন আমার বোধোদয় হলো, তাইলে আমি কোথায়? চাচা বললেন, এটা তো ১৫ নাম্বার। সাইনবোর্ডে তাকিয়ে দেখি এটা ১৫। 😛 আর আমি কিনা এতক্ষণ শংকর মনে করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হে হে। শেষ পর্যন্ত সাকিবের বাসায় গেলাম। ইফতার করলাম আলহামদুলিল্লাহ বেশ তৃপ্তি নিয়ে। তানভীর, জুয়েল আর নাসির এসেছিল। মজার ব্যাপার হলো জুয়েল আসার পর দেখা গেল নাসির আর জুয়েলের টি-শার্ট সেইম ব্রান্ড-সেইম কালার। 😀

You may also like...