তুর্কির দিনলিপি ৫

Finally!! got rice like Bangladesh. :)
বাংলাদেশ থেকে আসার পর তুর্কিতে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য এপ্লাই করতে হয়। সব দেশীদেরই এপ্লাই করা লাগে নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর। আমাদের ভিসার মেয়াদ ছিল ১ মাস, সুতরাং এক মাসের ভিতরেই এপ্লাই করা লেগেছে। এরপর এপ্লিকেশন করলে জরিমানা দেয়া লাগে। রেসিডেন্স পারমিটের এপ্লিকেশনের সময় আরো কিছু ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হয়। আমরা যেটার জন্য সমস্যায় পড়েছিলাম সেটা হচ্ছে ইন্স্যুরেন্স। এখানে হেলথ ইন্স্যুরেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। যদি বাংলাদেশ থেকে করে আসতাম তাহলেও হতো কিন্তু দেশে থাকার সময় আমাদের মেন্টর এ সম্পর্কে গুরুত্ব দেননি। যাই হোক শেষ পর্যন্ত এখানেই ইন্স্যুরেন্স করেছি। মাইগ্রেশন অফিসে এপ্লিকেশন করার জন্য অনলাইনে সব তথ্য পূরণ করে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। তারপর ফরম পূরন করে ট্যাক্স অফিসে গিয়ে ৫৫ লিরা জমা দিয়ে রিসিপ্টসহ নির্দিষ্ট টাইমে যাওয়া লাগে। অনলাইনে তথ্য পূরন করার সময় আরেক হ্যাপা। লিখা ছিল এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড। ভাবলাম, আমাদের দেশে যেমন ব্যবহার করি এই শব্দটি সেরকমই। সর্বোচ্চ শিক্ষা কতটুকু। কিন্তু সব কিছু সাবমিট করে পরে ফরম ডাউনলোড করে দেখি এখানে কোথায় পড়ি সেটা চাওয়া হয়েছে। 😛 আবার এপ্লিকেশন করলাম। ভাগ্য ভাল ডুপ্লিকেটে সমস্যা হয়নি। ২৭ তারিখ দুপুর ২টায় গিয়ে কাগজপত্র সাবমিট করলাম। একজনও ইংরেজি বলতে পারেনা। ইউনিভার্সিটি থেকে লেকচারার সাথে গিয়েছিলেন বলে রক্ষা। কয়েকজন সিরিয়ানকে দেখলাম সেখানে। দরজায় আরবীতে লিখা আছে আগামী সপ্তাহে কোন এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাবেনা। আমাদেরকে একটা সাইনড রিসিপ্ট দেয়া হলো। পারমিট কার্ড ইউনিতে পাঠিয়ে দেবে ওরা।
২৯/১০/১৫
এদিন তুর্কির রিপাবলিক ডে ছিল। রাস্তাঘাটে ওরকম সেলেব্রেশন ছিলনা। স্টেডিয়াম বা পাব্লিক প্লেসে নাকি হয় (রুমমেটকে জিজ্ঞেস করে জানলাম)। আমরা যে শহরে থাকি এটা এমনিতেও ছোট শহর। বেশিরভাগই স্টুডেন্ট। এখন রিপাবলিক ডে আর ইলেকশনের ছুটি মিলিয়ে ১ সপ্তাহের লম্বা ছুটি চলছে। সবাই বাড়ি চলে গেছে অথবা ঘুরতে চলে গেছে। আমরা দুপুরবেলা খেয়ে দেয়ে আমাদের তুর্কিশ রুমমেটকে নিয়ে বাসার অপজিটে বসা সাপ্তাহিক হাটে গেলাম। ওখানে ঘুরতে ঘুরতে মনে হলো মানুষ আর ভাষা বাদ দিলে বাংলাদেশের কোন হাটেই যেন উপস্থিত হয়েছি। 😀 কাপড়, খেলনা, সব্জি, ফল, চাল-ডাল কী নেই। সবই আছে এবং অবশেষে আমরা বাংলাদেশের চালের সাথে মিলে এমন চালও খুঁজে পেলাম। :v বাজার সদাই করে বাসায় এলাম।
৩০/১০/১৫
আজ প্রথম ইলেকশন উপলক্ষে মানুষকে রাস্তায় দেখলাম। জুমা পড়ে আসার সময় কয়েকটা ছেলেমেয়েকে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। আর বিকেলে দেখি কিছু মানুষ রাস্তায় হেঁটে হেঁটে মিছিলের মত যাচ্ছে আর নির্বাচনী ভ্যান থেকে অল্প আওয়াজে কিছু বলা হচ্ছে। আমাদের দেশের মত মানুষের বাড়িঘরের দেয়াল পোস্টার দিয়ে ভরানোর সিস্টেম এখানে দেখিনি। বিলবোর্ড আছে, পাহাড়ের গায়ে লাগানো বড় ব্যানার আছে, কারাবুক সিটি সেন্টারে দড়িতে ঝুলানো কাপড়ের ছোট ছোট দলীয় সাইন আছে আর রাস্তার মোড়ে দাঁড়ানো ভ্যান আছে। আমাদের পোলিশ ফ্রেন্ডগুলো গেছে আনতালিয়া ঘুরতে। ক্ষনে ক্ষনে আমাদেরকে নক করছে আমরাও যেতে। দেখি কোচসার্ফিং এ কোন হোস্ট পাই কিনা। তাহলে হয়তো যেতেও পারি।

You may also like...