ঈদ শুভেচ্ছার একাল সেকাল
আমাদের ছোটবেলায় মোবাইল ছিলনা। তখন বেশি প্রচলন ছিল ঈদ কার্ডের। অপেক্ষা করতাম আব্বু কখন সৌদি থেকে সুন্দর সুন্দর ঈদ কার্ড পাঠাবে। স্মৃতিতে যে ঈদ কার্ডের ছবি এখনও উজ্জ্বল সেটা ছিল শক্ত একটা কারুকাজময় কার্ডে হাইলাইটার পেন দিয়ে আব্বুর হাতে আঁকা মাসজিদের আকৃতি। এরপর আমরা যখন সৌদিতে গেলাম তখন অপেক্ষা থাকত বাংলাদেশ থেকে কখন নানু-মামা-খালারা পাঠাবে। পাশাপাশি আব্বু-আম্মুর সাথে তারা ফোনে কথা বলার সময় একটুখানি সালাম আর কুশল বিনিময়ের দুর্লভ সুযোগ। 😀
কৈশোরে এলো ফোন। তখন বারবার মোবাইল দেখা আত্মীয়-বন্ধুরা টেক্সট করল কি না… নিজেও অন্যদেরকে টেক্সট করা।
আর এখন…… সেই উৎসাহ-আনন্দ-উদ্দীপনা কোথায় যে মিলিয়ে গেল… এখন শুভেচ্ছা বিনিময়ের ৭০ ভাগই হয়ে থাকে ফরমালিটিজ রক্ষায়। সময় কোথায় আগের মত শুভেচ্ছার পিছনে ব্যয় করার। ব্যস্ততা সেইসাথে থাকে আত্মসমালোচনার পিছুটান। পুরো রামাদান মাসে আখিরাতের জন্য কী সঞ্চয় করতে পারলাম…
ভার্সিটির ছুটিতে বাড়ি এসেও কাজ পিছু ছাড়েনি। কাজ-কর্ম থেকে অবসর পেলাম আজ রাত ৯ঃ৪৫ এ। তারপর এক জোড়া জুতো কেনার জন্য দৌড়। এর মাঝে অনেকে ফোনে টেক্সট করেছে। ফেবুতে এসেও ইনবক্স পেলাম বেশ। ফোনে হয়তো কাউকে টেক্সট রিপ্লাই দেয়া হবেনা। ফেবুরগুলো পাবে যেহেতু বসলাম। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা হবে কাল বিকেলে। প্রতি বছরের রূটিন নৌ-ভ্রমণ এবার হবেনা। নৌ-ভ্রমণের আয়োজকেরা কেউ আজ দেশের বাইরে, কেউ সংসার নিয়ে ব্যস্ত, কেউ নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত। তারপরও পরিবারের সাথে, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়ানোতে ঈদ খুব একটা নিরানন্দ কাটবেনা।
ভবিষ্যতের ঈদ বা ঈদের শুভেচ্ছা কেমন হবে কে জানে।