সূর্যোদয় ও চেরিফুলের দেশের দিনলিপি-২

টাইফুন আসার আগের রাতে দুই ভাবুক নিশুতি রাতে (রাত ১০ঃ৩০টাই এখানে নিশুতি রাত। মানুষ এখানে অযথা রাত জাগেনা। সকালে উঠেই অফিসে যেতে হয়।) ভাত খেয়ে হাঁটতে বের হয়েছিলাম ছাতা নিয়ে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে। হাঁটতে হাঁটতে মনে পড়ল, এখানে তো বাংলাদেশের মত টং দোকান নাই যে দাঁড়িয়ে এক কাপ চা খাব। রাস্তার পাশে ডিজিটাল চা-কফির দোকান আছে (ভেন্ডিং মেশিন) কিন্তু সব ঠান্ডা। এই কথা বলতে বলতেই রাস্তার অপর পাশে জোনাথানস কফির দিকে চোখ গেল। টাকা নিয়ে বের হইনি প্লাস দোকানের আউটলুক দেখে মনে হলো এখানে গেলে বহু টাকা লাগবে। পরে ভাবলাম একটু এক্সপ্লোর করে আসি। এসে দরজার সামনে কানজিতে (চাইনিজ লেটারের মত জাপানিজ লেটার। জাপানে টোটাল ৩ধরনের ক্যারেক্টার ইউজ হয় লিখতে।) সময় লেখা দেখে একটু কনফিউজড হয়ে গেলাম। ভেতরে আবার দুয়েকজন কাস্টমারও দেখা যাচ্ছিল। পরে হেলাল ভাই সাহস করে ঢুকে গেল জিজ্ঞেস করতে। মহিলা জাপাংলিশ দিয়ে বুঝাল যে খোলাই আছে। খাবার দাবার নাই এখন। শুধু ড্রিংকস (নানান পদের কফি, চা, জুস আর সফট ড্রিংক)। দুইজনের জন্য ৯৬৫ইয়েন লাগবে। ঠিক আছে, খাই কফি। তারপর কফি নিয়ে শুনলাম এখানের সব আনলিমিটেড। যা পার নিতে পার, যতবার ইচ্ছা। খেয়ে টেয়ে বিল দিতে হেলাল ভাইয়ের মনে পড়ল তার পাসমোতে এত টাকা নাই। আমার পাসমোতে আছে মাত্র ১১২ইয়েন। পরে জিজ্ঞেস করলাম, ক্যাশ কার্ডে হবে? বলল, হবে। দেয়ার পর ক্রেডিট না কি জানি জিজ্ঞেস করল। হ্যাঁ বললাম। পাঞ্চ করার পর বলল এরর দেখাচ্ছে, হয়তো টাকা নাই। আমি বললাম, ৩মাং (৩০হাজার) তো থাকার কথা। কী আর করা… মেশিন যখন এরর দেখাচ্ছে। পরে আমাকে বসিয়ে রেখে হেলাল ভাই বাসায় এসে টাকা নিয়ে এরপর গিয়ে পরিশোধ করল। আমি এই ফাঁকে একটা গ্রিন জুস মেরে দিলাম। অবশেষে দুই বান্দার বৃষ্টি বিলাস প্লাস এডভেঞ্চার শেষ হলো। হা হা
আর হ্যাঁ, এখন থেকে এই সিরিজের নাম হবে সূর্যোদয় ও চেরিফুলের দেশের দিনলিপি।
#সূর্যোদয়_ও_চেরিফুলের_দেশের_দিনলিপি

You may also like...